অতঃপর, ভালোবাসা!
 by- জল ফড়িং 
 
 প্রথম পর্ব
 ১.
 :তোর বিএফের কি খবর রে?
 :বিএফ! পারিস্ ও তুই।
 :মানে কি? বিদেশে গিয়ে বিদেশী বিএফ পাবি, ভালো না! 
 :হইসে হইসে! এখন তাড়াতাড়ি কিছু খাওয়া। ক্ষুধা লাগসে।
 :জী মহারাণী! চলুন।
 
 ২.
 রিয়া'র সাথে যখন আমার পরিচয় হয়, তখন ও ক্লাস থ্রি'র একটা পুঁচকে মাত্র! 
আমিও খুব একটা বড় ছিলাম না। ক্লাস ফাইভে পড়তাম। একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখি
 আম্মু পুঁচকেটাকে নিয়ে মহাব্যস্ত। আমার দিকে ফিরেই দেখছেনা! একে তো তাড়াতে
 হয়! খবর নিয়ে জানতে পারলাম পুঁচকেটা পাশের বাসায় নতুন এসেছে।
 :এই! তোর নাম কিরে?
 :রিয়া। তোর?
 :মুগ্ধ। এই! তুই আমাকে চিনিস্?
 :চিনলে কি নাম জানতে চাইতাম?
 :তাহলে আমাকে তুই করে বলছিস্ ক্যান?
 :তুই আমাকে চিনিস্?
 :(থতমত খেয়ে) না!
 :তুই কেন আমাকে তুই করে বলছিস্!
 
 বোঝো ঠেলা! পুঁচকের নাক টিপলে দুধ বেরোবে, সে কিনা আসছে আমার সাথে ঝগড়া করতে! আজকে ও'র একদিন কি আমার একদিন!
 কিন্তু ইচ্ছেটাকে তখন মাটি চাপা দিতে হল, কারণ মা এসে ওকে নিয়ে গেছে 
 তো এভাবেই আমাদের শুরু। আমি আর রিয়া! সেই প্রথম দিনের ঝগড়ার রেশ আজো 
ফুরোয়নি। সারাদিন ঝগড়া চলছে কিন্তু আমাদের একে অন্যকে ছাড়া চলছেনা কিছুতেই।
 এমন যখন অবস্থা, কোন প্রস্তুতি ছাড়াই কাওকে না জানিয়ে রিয়া'র বাবা 
সপরিবারে গমন করলেন UK!
 ছেলেদের নাকি মেয়েদের মত কাঁদতে নেই। আমি পারিনি নিজেকে ছেলে বলে ধরে রাখতে!
 
 ৩.
 :বেশি খাইস্ না। মোটা হয়ে যাবি! 
 :মোটা মাই ফুট! একটা দিন অন্তত শান্তিতে খেতে দেরে বাপ!
 :মোটা হলে কিন্তু ছেলেরা তোকে আর পছন্দ করবেনা!
 :গেলি তুই! 
 আজকে আমার রিয়াটা দেশে এসেছে। খুব কম সময়ের জন্য কিন্তু এসেছে তো! আমার রিয়া কেনো বলছি? রিয়া তো আমারি! ও কি অন্য কারো!
 এতোদিন ধরে অপেক্ষা করেছি কখন আমার রিয়ামনি দেশে আসবে। এবার ওকে আমার মনের
 কথাটা জানাবো ঠিক করেছি। দিনটাও ঠিক করা আছে। পরশু আমার জন্মদিন। সে 
কারনেই তো রিয়া এসেছে দেশে। কেও কাওকে ভালো না বাসলে এভাবে ছুটে আসে নাকি! 
হ্যাঁ! সেদিন ই আমি ওকে বলব। আমি তোকে অনেক ভালোবাসি রিয়ামনি! অনেক!
 :মুগ্ধঅঅঅ! কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি শুনতে পাচ্ছিস্ না!
 :এভাবে ষাঁড়ের মত চেঁচানোর কি আছে! কি বলবি?
 :হ্যাপি বার্থডে! 
 :ওমা! গিফট ছাড়া হ্যাপি বার্থডে বলে দিলি?
 :রাখ তোর গিফট! আগে তোকে একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব।
 :একজন! কই? ইনি কে?
 :এতো অস্থির হচ্ছিস্ ক্যান? তুই না প্রথম দিন জানতে চেয়েছিলি? ও আমার বিএফ। নীল!
 
 শেষ পর্ব
 
 ৪.
 'রিয়ামনি'
 অবাক হচ্ছিস্ নাকি? না না! আমি পাগল হইনাই। তোকে তো সেই ছোটবেলা থেকেই আমি
 এই নামে ডাকি। মনে মনে! জানিস্, যেদিন প্রথম বুঝতে পেরেছিলাম আমি তোকে 
ভালোবেসে ফেলেছি, খুব অবাক হয়েছিলাম! এই ভেবে যে ক্যান তোর মত শাঁকচুন্নীর 
প্রেমে পড়লাম!
 তুই কি কোনদিন আমাকে বুঝবি না? এতে রাগ করার কি আছে? শাঁকচুন্নীকে তো শাঁকচুন্নীই ডাকবো!
 জানিস্ রিয়ামনি, আমি না খুব সার্থপর! কোনদিন তোকে বুঝতে চাইনি। সবসময় শুধু
 ভেবেছি তুই আমাকে খুব ভালোবাসিস। তাই কোনদিন জানতেও চাইনি। এটাও ভাবিনি যে
 তুই ও তো আমার মতই একজন মানুষ! তুই ও পারিস্ কাওকে ভালোবাসতে! রাগ করিস্ 
নারে। জানিস্ তো কত বড় অপদার্থ তোর এই বন্ধুটা!
 আমি তোর কাছে কখনো কিছু
 দাবী করিনি। এখনো করছিনা। শুধু সবসময় তোকে ভালোবেসে যেতে চাই। এখন যেমন 
বাসি! এইটা অন্তত কেড়ে নিস্ না। যেখানে যে অবস্থাতেই থাকি তোকে ভালোদেসে 
যাবো, তোর সাথেই থাকবো। তুই এতোদিন বন্ধু ভেবে যে ভালোবাসাটা দিয়েছিস, 
সেটাই শুধু দিস আমাকে। তাতেই চলবে!
 খুব ভালো থাকিস্ রিয়ামনি। অনেক ভালো! তোকে অনেক ভালোবাসি কথটা আর বলা হলোনা!
 তোর অপদার্থ
 'মুগ্ধ'
 
 উঁচু ঢিবি'র মাটিটা বৃষ্টির পানি পড়ে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। রিয়া খুব চেষ্টা
 করছে সেখানে একটা ছাউনি'র মত বানাতে। নতুন বলে এখনো পুরোপুরি বাঁধানো 
হয়নি। বৃষ্টি যেনো রিয়া'র এই বৃথা চেস্টা দেখে পরিহাস করছে! নাকি রিয়া'র 
কষ্টে সে ও সমব্যাথি! রিয়া'র চোখের পানি ধুয়ে দিতেই যেনো বৃষ্টি টা আর 
ঝমঝমিয়ে পড়া শুরু করল। অনেক জোরে!
 
 (বুঝতেই পারছেন অনেক কাঁচা 
হাতের লেখা। প্রথম বারের মত কোন লেখা প্রকাশিত হবে আমার। ইচ্ছে থেকেই কলম 
ধরা। আশা করব উৎসাহ দিবেন পাঠক রা। ভুলত্রুটি অবশ্যই কিছু আছে। ক্ষমাসুন্দর
 দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি সকলে)
 
No comments:
Post a Comment